এখন তো সবাই টাইম মেশিনে মহাবিশ্ব ঘুরে বেড়াতে চায়। আবার এটাও জানতে চায়, বর্ষায় বাজ থেকে বাঁচার উপায় কী। জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের পাঠানো মহাবিশ্বের সাম্প্রতিক সাড়াজাগানো ছবিগুলো আমাদের নিয়ে গেছে বিগ ব্যাংয়ের আরও কাছে। বিজ্ঞানের সবকিছু জানাবোঝার আগ্রহ এখন অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। সে জন্যই বইটি সবার হাতে হাতে থাকতে পারে।
টাইম ডায়ালেশন কী? সূর্যের চেয়ে চাঁদ ৪০০ গুণ ছোট আবার ৪০০ গুণ কাছে কেন? মহাশূন্য ঠান্ডা কেন? স্বপ্ন কেন দেখি? বানর কেন কথা বলতে পারে না? কোভিডের টিকা নিলেও কেন করোনা হয়? বাঘ-সিংহ শুধু মাংস খেয়ে বাঁচে কীভাবে? একই সঙ্গে দুই হাতে লেখা যায় না কেন? নারীর চেয়ে পুরুষদের মাথায় বেশি টাক কেন? ভয় পাওয়ার পেছনের বিজ্ঞান কী? ফোবিয়া দূর করব কীভাবে? মশা তাড়াব কীভাবে? মানুষের শরীরে জীবকোষের চেয়ে ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বেশি কেন? এসব কী ও কেন-এর উত্তর কী? পড়ুন বিজ্ঞানের এই ব্যতিক্রমী বইটি।
মুক্তিযুদ্ধে জোহরাকে হারিয়েছে তানেস। তারপর পেরিয়ে গেছে ৫০ বছরের বেশি। আজও তানেসের বুকপকেটে সব সময় থাকে জোহরার ছবি ও চিঠি। একজন মুক্তিযোদ্ধার জীবনের সত্য ঘটনা অবলম্বনে লেখা হয়েছে উপন্যাসটি।
১৯৭১ সাল। যুদ্ধের ডাকে সাড়া না দিয়ে থাকতে পারল না তানেস। শুনে কেঁদে বুক ভাসালেও দেশের কথা ভেবে তাকে আটকে রাখেনি জোহরা। যাওয়ার আগে জোহরাকে তানেস কথা দিয়েছিল দেশ স্বাধীন করে তবেই ফিরবে তার কাছে। জোহরাও কথা দিল অপেক্ষা করবে তার জন্য। দেশ স্বাধীন করে ফিরে এল তানেস। কিন্তু পেল না জোহরাকে। পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছে জোহরা। সেই থেকে তানেস জোহরার ছবি আর চিঠি আঁকড়ে ধরে বেঁচে আছে। এর মধ্যে পেরিয়ে গেছে ৫০ বছরের বেশি সময়। কিন্তু মুহূর্তের জন্য তানেস বুকপকেট থেকে সরিয়ে রাখেনি জোহরার ছবি।
১৯৭৫-৮১ সাল বাংলাদেশের ইতিহাসে এক ঘটনাবহুল পর্ব। এ সময়ে এ দেশে এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে, যা রাষ্ট্রের চেহারা অনেকটা পাল্টে দেয়। সেসব ঘটনা নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা রয়েছে। রয়েছে পক্ষে-বিপক্ষে নানাজনের নানা মত। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যা, নভেম্বরের জেলহত্যাকাণ্ড, সেনাবাহিনীর ক্ষমতা হাতে নেওয়া, অভ্যুত্থান-পাল্টাঅভ্যুত্থান ইত্যাদি ঘটনার কোনোটির সাক্ষী আবার কোনোটির প্রত্যক্ষদর্শী এই বইয়ের লেখক। সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা হিসেবে ঘটনাগুলো কাছ থেকে দেখার ও অনুভব করার সুযোগ হয়েছিল তাঁর।
সেই উত্তাল-অনিশ্চিত সময়ের জানা-অজানা অনেক তথ্য, ঘটনাপ্রবাহের অন্তরঙ্গ বিবরণ পাঠক পাবেন এ বইয়ে। ইতিহাস-অনুসন্ধিৎসু পাঠক যেমন বইটি পাঠে কিছু বিষয়ে নতুন করে ভাবতে উদ্বুদ্ধ হবেন, তেমনি সাধারণ পাঠকেরও আগ্রহ বা কৌতূহল মেটাবে এ বই।
সিনেমার একটা দল এসেছে আখাউড়ায়। সারা দিন বৃষ্টি, ওপেন করা যাচ্ছে না ক্যামেরা। দলে কোনো নায়ক-নায়িকা নেই। আছে খাঁচায় বন্দী এক ট্রাক কাক। ছবির ডিরেক্টর সুমন। একগুঁয়ে লোক। তার নিজস্ব এক দ্বীপের একমাত্র বাসিন্দা দিপা। চিফ অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর তরুণ।
বেঁটেখাটো মানুষটার জন্মগতভাবে বাঁ পায়ে সমস্যা। সঙ্গে জুটেছে স্থানীয় কিশোর বাবলু। রোগাপটকা বুকে সে স্বপ্ন পুষে রাখে। একপর্যায়ে এ দলে যুক্ত হয় সম্মোহনী শক্তির রহস্যময় এক মানুষ—সুলতান শেখ। আর আছে সুখপাখি, যার দেখা পেলে দুঃখ আর কখনো স্পর্শ করে না।
সুমন, তরুণ আর বাবলু—প্রত্যেকের জীবনই আজব কিছু ঘটনার যোগফল। সেগুলো এতই অদ্ভুত যে বিভ্রম বলে ভুল হয়। তাদের জীবনের পুরোটাই কি স্বপ্ন, নাকি ওরা বাস করছে অন্য কারও স্বপ্নে?
স্বপ্ন ও বাস্তবতার মায়াবী উপাখ্যানে আপনাকে আমন্ত্রণ।
লোভ। স্বর্ণের কাছাকাছি পদার্থ থেকে স্বর্ণ তৈরি ও অমরত্বের লোভই মানুষকে রসায়নের সন্ধান দিয়েছিল। পরমাণু আবিষ্কার ও মৌলদের গায়ে সংখ্যা বসানোর মাধ্যমে সেই রসায়ন পরিণত হয় বিজ্ঞানে। ১৮৬৯ সালে দিমিত্রি মেন্ডেলিভ সবকিছুকে এক সুতায় গাঁথার প্রচেষ্টায় তৈরি করেন এক পৃষ্ঠার মৌলতালিকা—পর্যায় সারণি। কিন্তু বাস্তব জীবনে রসায়ন কী কাজে লাগে? আসলে প্রতিটি জীব একেকটি রাসায়নিক কারখানা। আপনার জামাকাপড় থেকে শুরু করে খাদ্য উৎপাদন, পরিবহন, জ্বালানি এবং আমাদের আজকের বর্ণিল পৃথিবী—প্রতিদিনের জীবনে ব্যবহৃত প্রতিটি বস্ত্তর পেছনেই রয়েছে রসায়নবিজ্ঞানের অবদান। স্কুল-কলেজে রসায়ন যাঁদের কাছে নীরস মনে হয়েছে, এ বই তাঁদেরকে রসায়নের ভিন্ন এক জগতের গল্প শোনাবে। পিটার অ্যাটকিনসের সহজ ও গভীর অন্তদৃর্ষ্টি আপনাকে নিয়ে যাবে রসায়নের গভীরে। যেখানে জীবন মিলেমিশে এক হয়ে যায় বিজ্ঞানচর্চার সঙ্গে। আশা করা যায়, বিজ্ঞানশিক্ষার্থী থেকে সাধারণ পাঠক সবার কাছে বইটি সমাদৃত হবে।
অয়ন-জিমিকে নিয়োগ দেন বৃদ্ধ এক ভদ্রলোক। তার ধারণা, আদিবাসীদের এক দানবকে তিনি দেখেছেন, যেটা দেখতে অর্ধেক পতঙ্গ, অর্ধেক মানুষ। এই নিশিপতঙ্গ যারা দেখে, তাদের জীবনে নেমে আসে বিপর্যয়। একের পর এক বিপদে তাদের জীবন ধ্বংস হয়ে যায়। ওই বৃদ্ধের বাবাও নাকি দেখেছিলেন ওই নিশিপতঙ্গ। অয়ন-জিমিকে এবার বের করতে হবে নিশিপতঙ্গকে। তবে আসলেই কি আছে এই নিশিপতঙ্গ, নাকি বৃদ্ধের কল্পনা! সেটি বের করতেই লেগে যায় দুই বন্ধু।
আরতি ও শিব বিয়ে করে হানিমুনে যাচ্ছে। বিমানে তাদের সঙ্গে দেখা হয় দুই বাংলার জনপ্রিয় নায়ক ফেরদৌসের সঙ্গে। তারপর এমন ঘটনা ঘটে, ফেরদৌস যা কল্পনাও করতে পারেননি। এত হাসি, আনন্দ, সুখের মাঝে কী এমন ঘটল, যা ফেরদৌসের মস্তিষ্ককে নাড়িয়ে দিল। জানতে হলে পড়তে হবে এ উপন্যাস।
এটা কি উপন্যাস নাকি আমার জীবনের কথা? আমি জানি না। আমি ভীষণ সংবেদনশীল, বন্ধুপরায়ণ একজন মানুষ। তাই লিখতে গেলে নিজের জীবনের অনেক ঘটনাই চলে আসে। ভেবেছিলাম আরতি আর শিবের ভালোবাসার পরিণতির গল্প লিখব। কিন্তু কীভাবে যেন আমি নিজেও গল্পের ভেতরে ঢুকে পড়লাম। ভ্রমণকাহিনি পড়তে আমার ভীষণ ভালো লাগে। লিখতে চেয়েছিলাম ভ্রমণকাহিনি, হয়ে গেল প্রেমকাহিনি। আমার ভক্ত, দর্শক, পাঠক বন্ধুরা সবাই আমার প্রচণ্ড ভালোবাসার। এই ভালোবাসার মানুষেরা দুই দশকের অধিক সময় ধরে আমার অভিনয় সহ্য করেছেন। আশা করি, মাঝে মাঝে আমার কষ্টের এই লেখাগুলোও পড়বেন। আমি আনন্দিত হব।
গল্পগুলো ছোট, সহজ ও সাবলীল। লেখকের গল্প বলার ভঙ্গিও চমত্কার। এগুলো সহজেই কিশোর পাঠকের মনে ভাষাশিক্ষার সঙ্গে আনন্দেরও সঞ্চার করবে। এককথায় বইটিকে বলা যায় ভাষা শেখার আনন্দপাঠ। বইটি কিশোর পাঠকদের ভালো লাগবে। বাংলা ভাষার কলাকৌশল নিয়ে লেখা চমত্কার একটি বই গল্পে শেখো বাংলা ভাষা। এ বইয়ে লিপি এল কেমন করে তার ধারণা পাওয়া যায় ‘অনেককাল আগের কথা’ গল্পটি পড়ে। বানানে চন্দ্রবিন্দুর ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন লেখক ‘বৃষ্টিতে নতুন খেলা’ গল্পে। ‘গভীর রাতের গল্পে’র ভেতরে লুকানো আছে বাংলা বানানে ‘ণ’ ব্যবহারের নিয়ম। উ-কারের বহুরূপী ব্যবহারের প্রসঙ্গ এসেছে ‘হরবোলা নিরু’ গল্পে। এ ছাড়া কয়েকটি গল্পে শব্দের অর্থ ও প্রয়োগের দিকগুলো সহজ করে তুলে ধরা হয়েছে। গল্পগুলোর কেন্দ্রীয় চরিত্র অনন্যা। বাকি চরিত্রগুলো বিভিন্ন প্রসঙ্গে ও বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন পরিবেশে এসেছে। এ গল্পগুলোতে বাংলা ব্যাকরণের গুরুত্বপূর্ণ অনেক দিক লেখক কিশোর পাঠকদের উপযোগী করে তুলে ধরেছেন। গল্পের আদলে, ব্যাকরণের নীরস কাঠিন্য পরিহার করে। —মাহবুবুল হক
বাঙালির সমন্বিত সংস্কৃতি ও ঐক্যবদ্ধ জাতীয়তা গড়ে ওঠার পথের সমস্যা বা অন্তরায়, সাতচল্লিশের দেশভাগের পেছনের অজানা বা কমজানা নানা ঘটনা ও কারণ, শেরে বাংলা ও সোহরাওয়ার্দী আমাদের এই দুই জাতীয় নেতার রাজনৈতিক ভূমিকার মূল্যায়ন, ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের অতুলনীয় দেশপ্রেম, মোতাহের হোসেন চৌধুরীর সংস্কৃতিচিন্তার বিশদ পরিচয়, বুদ্ধিজীবী হিসেবে মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী ও আনিসুজ্জামানের অনন্যতা ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে মোট বিশটি প্রবন্ধের সংকলন এ বইটি। প্রতিষ্ঠিত বা বহুলপ্রচারিত ধারণার বিপরীতে তথ্য ও যুক্তির আলোকে কিছু বিষয়কে নতুনভাবে যাচাই ও মূল্যায়ন করতে চেয়েছেন লেখক গ্রন্থভুক্ত প্রবন্ধগুলোতে। পাঠকের সাধারণ কৌতূহল মেটানোর পাশাপাশি তাঁদেরকে যা নতুন জিজ্ঞাসারও মুখোমুখি করবে। নিরাসক্ত বিচার এবং তথ্য ও যুক্তিনিষ্ঠ বক্তব্যের অতিরিক্ত লেখকের সহজ-সরল কিন্তু শাণিত ভাষা বইটির এক বাড়তি আকর্ষণ।
নির্মলেন্দু গুণের হার্ট অ্যাটাক হলো। সামাদ ভাই বললেন, ‘গুণদা, বাইরে তো ভিড় হয়ে গেছে। টেলিভিশনের বহু ক্যামেরা এসে গেছে।’ হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে তিনি বললেন, ‘আমি তো এঁদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারব না। আমি তো মারা যাব না।’ কবি-সাহিত্যিকেরা বেশির ভাগই মজার মানুষ। হুমায়ূন আহমেদ, আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ কিংবা নির্মলেন্দু গুণের রসবোধের কোনো তুলনা হয় না। তাঁদের রসিকতাগুলো দেশবিখ্যাত এবং চিরন্তন আনন্দ ও শিক্ষার উত্স। আবার রসবোধে খ্যাতি তেমন নেই, এমন মানুষও ঘটিয়ে থাকেন মজার মজার ঘটনা। শুধু মজার ঘটনা তো নয়, লেখক-কবিদের জীবনে ঘটে অনেক দুঃখের ঘটনা; আর সারাক্ষণই তাঁদের পোড়াতে থাকে শিল্পের আগুন। সমকালীন সাহিত্যের অনেক শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিককে কাছে কিংবা দূর থেকে দেখেছেন আনিসুল হক। লেখকদের নিয়ে আনিসুল হকের স্মৃতি, অভিজ্ঞতা, কৌতুক, আনন্দ-বেদনা আর হাহাকারের গল্পগুলো ধরা থাকল এই বইয়ে। এই লেখাগুলো একই সঙ্গে স্মৃতিচারণা, সাহিত্যের উদ্যাপন, লেখকদের প্রতি সম্মান ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং সাহিত্যিক মূল্যায়নের রেখাচিত্র। লেখক পরিচিতি আনিসুল হক জন্ম ৪ মার্চ ১৯৬৫, নীলফামারী। শৈশব ও বাল্যকাল কেটেছে রংপুরে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, রম্যরচনা, ভ্রমণকাহিনি, শিশুসাহিত্য—সাহিত্যের নানা শাখায় সক্রিয়। প্রথমা থেকে প্রকাশিত হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং সে সময়ের মানুষদের নিয়ে তাঁর লেখা উপন্যাসের ছয়টি পর্ব—যারা ভোর এনেছিল, উষার দুয়ারে, আলো-আঁধারের যাত্রী, এই পথে আলো জ্বেলে, এখানে থেমো না ও রক্তে আঁকা ভোর। পেয়েছেন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারসহ বেশ কয়েকটি পুরস্কার। তাঁর বই অনূদিত ও প্রকাশিত হয়েছে দেশ-বিদেশে, বিভিন্ন ভাষায়।