মৌরি মরিয়ম বর্তমান বাঙালি লেখক সমাজে জনপ্রিয় এক নাম মৌরি মরিয়ম। ১৯৯১ সালের ২৫ মে বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় মৌরি মরিয়ম জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মরহুম আজিজুল হক এবং মা মনজু বেগম। তিনি বেড়ে উঠেছেন রাজধানী ঢাকার শহরঞ্চলে। ধানমন্ডি গার্লস স্কুল থেকে ২০০৯ সালে মাধ্যমিক এবং বদরুন্নেসা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন ২০১১ সালে। ২০১৫ সালে ঢাকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতা বিভাগে তিনি স্নাতক সম্পন্ন করেন। শৈশবকাল থেকেই বই পড়ার অভ্যাস গড়ে ওঠে মৌরির। লেখাপড়ার পাশাপাশি নিয়মিত গল্পের বই পড়তেন তিনি। বইয়ের প্রতি ভালোবাসা থেকেই লেখালেখিতে মনোনিবেশ তার। তার লেখক প্রতিভা জাগ্রত হয় স্কুলের ম্যাগাজিনে গল্প-কবিতা লেখার মধ্য দিয়ে। সেই থেকেই লেখক সত্ত্বাকে জিইয়ে রেখেছেন মৌরি। ছাত্রজীবনে লেখক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে রচনা করেছেন ৪-৫টি উপন্যাস। তিনি আত্মপ্রকাশ করেন ২০১৮ সালে। মৌরি মরিয়ম এর উপন্যাস ‘প্রেমাতাল’ ২০১৮ সালের বইমেলায় প্রকাশিত হয়। ঠিক এর পরের বছর ২০১৯ সালের বইমেলায় তিনি উপহার দেন তার দ্বিতীয় উপন্যাস ‘অভিমানিনী’। ‘তোমায় হৃদমাঝারে রাখব’ তার প্রকাশিত তৃতীয় উপন্যাস। এরপর মৌরি মরিয়ম এর বই সমগ্র এর মধ্যে আরও আছে ‘সুখী বিবাহিত ব্যাচেলর’। খুব অল্প সময়ে মাত্র ৪টি উপন্যাস দিয়ে তিনি পাঠকের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। মৌরি মরিয়ম এর বই সমূহ পাঠককূল আগ্রহভরে পড়ে। শত ব্যস্ততার মধ্যেও লেখালেখির জন্য সময় তিনি বের করেই নেন, কেননা বই লেখা মৌরি মরিয়মের নেশা। সারাজীবন তিনি লেখালেখির মধ্যেই থাকতে চান।
অসম ভালোবাসায় দাউ দাউ করে জ্বলে বাড়ির চিলেকোঠা। অলিন্দ অনলে পুড়ে যাওয়া চিঠিগুলোয় কেটে যায় সময় নিমগ্ন। হঠাৎ বিভোর করে স্মৃতির পাতায় ছোট্ট তরীর গোধূলী লগ্ন। বিরহ রঙিন করে প্রেমিকের দেয়া একগুচ্ছ বেগুনি ফুল। চোখের জলে ভিজে যায় শাপলার মালা। জল থেকে তুলে আনা ব্যাটে বিশ্বজয় প্রেয়সীর মন জয় করার কী উপায়?'' অলিন্দ অনলে একটি অসম প্রেমের গল্প। প্রেয়সীর প্রতি তীব্র ভালোবাসা নিয়ে কেওয়াটখালী রেলব্রিজে ছুটে চলার গল্প। সীমাহীন অনিশ্চয়তা নিয়েও আশায় বুক বাঁধার গল্প। শেষ পর্যন্ত কি হয় অলিন্দ অনলে পুড়তে থাকা অন্তরার? অলিন্দর গাঢ় কবিতা আর অসম প্রেমের শেষ স্টেশন কোন শহরে?
কিছু মানুষ ভালো থাকার আশায় এই শহরকে ভালোবেসে তার বুকে বসতি গড়ে। কিন্তু শহর তাদেরকে ভালোবাসতে পারে না। দিনশেষে অনেকেই ভালো নেই। অনেক অজানা সমীকরণে বাঁধা। তবু কেউ জিজ্ঞেস করলে তারা বলে, “ভালো আছি।” মনের গহিনে কষ্ট রেখে ভালো আছি বলতে বলতে কিছু মানুষ খুব ক্লান্ত। এই ক্লান্তি বুকে নিয়েই দুঃখ-আনন্দের মেঘ দিয়ে তারা কল্পনার মেঘকুটির তৈরি করে। একসময় তারা সত্যি সত্যি মেঘ হয়ে যায়, দূরের মেঘ। জীবনের শেষে অথবা সম্পর্কের শেষে শুধু স্মৃতি থাকে, সময়টা হারিয়ে যায়।
মহাজন হাতেম আলীর ঘরে তিন-তিনজন স্ত্রী। তবু তার কামনার চোখ পড়ে কুলির কিশোরী মেয়ে কমলার উপর। একমাত্র কন্যাকে অবলম্বন করে বেঁচে থাকার চেষ্টারত কালুকে চাপ প্রয়োগ করে মেয়েকে মহাজনের চতুর্থ স্ত্রী হিসেবে কনের সাজে সাজাতে। মহাজনের যোগ্য সন্তান হারেছের চোখ পড়ে প্রস্ফুটিত গোলাপ কমলার উপর। কমলার স্কুলে যাওয়ার পথে তার প্রেম নিবেদনের নামে লালসার চোখ অনুসরণ করতে থাকে। বাবার আড়তের কুলি কালুর উপর নির্দেশ জারি করে মেয়ের সাথে তার বিয়ের ব্যবস্থা করতে। বাপ-ছেলে একই সাথে কালুর একমাত্র বেঁচে থাকার অবলম্বন মেয়েকে বিয়ে করতে উঠেপড়ে লাগে। অসহায় কালু বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে মানসিকভাবে। মেয়ের কাছে দুজনের একজনকে বেছে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া ভিন্ন পথ নেই। কিন্তু অন্য ধাতুতে গড়া কমলা পিতার পর্যুদস্ত চেহারা দেখে ফুঁসে ওঠে। রুখে দাঁড়ানোর প্রতিজ্ঞা করে পিতার কাছে। কমলা কি পারবে দুটি মূর্তিমান শয়তানের হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে? পারবে কি নেতিয়ে পড়া পিতার মনে সাহস সঞ্চার করতে? সমাজের অসংগতিপূর্ণ ঘটনার উত্তর পেতে হলে পড়তে হবে-“বাবা, তোমাকে ভালোবাসি” কাহিনিটি।